Uncategorized

পানিবাহিত রোগ সমূহ ও আমাদের করণীয়

পানিবাহিত রোগ সমূহ ও আমাদের করণীয়

পানিবাহিত রোগ: অপরিশুদ্ধ পানি দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার এবং পানি পানের মাধ্যমে যে ধরণের রোগ-ব্যাধি সংক্রামিত হয়ে থাকে তাকেই বলা হয় পানিবাহিত রোগ বা জলবাহিত রোগ। এই ধরনের অসুখ সাধারণত পানিতে বিচরণশীল রোগসৃষ্টিকারী জীবাণুদের দ্বারা সংঘটিত হয়।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুসারে প্রত্যেক বছর পৃথিবীতে প্রায় দশ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হল পানিবাহিত রোগ।গবেষণায় থেকে প্রমাণিত, এক ফোটা অপরিশুদ্ধ/নোংরা পানিতে প্রায় ৫ কোটিরও বেশি ব্যাকটেরিয়া বাস করতে পারে। তাই এমন অকাল মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিরাপদ পানি সরবারহ সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন।

পানিবাহিত রোগের ধরণ:

পানিবাহিত রোগের মধ্যে ডায়রিয়া, আমাশয়, পোলিও, হিপাটাইটিস এ ও ই, টাইপয়েড, প্যারাটাইপয়েড ইত্যাদি অন্যতম। এটি দুই ধরনের, তরল ডায়রিয়া এবং আমাশয়। কলেরা মারাত্মক ধরনের ডায়রিয়ার একটি আদিরূপ; এটি Vibrio cholerae নামক জীবাণুর কারণে ঘটে থাকে। আর এক রকমের জীবাণু (ব্যাসিলাসসমূহ) যেমন শিগেলা, আমাশয় সংঘটিত করে থাকে। এটি এক ধরনের ডায়রিয়া যাকে সচরাচর ব্যাসিলারি ডিসেন্ট্রি বলা হয়ে থাকে। সালমোনেলা নামক একদল জীবাণু অন্ত্রে পানির সাথে প্রবেশ করে সংক্রমণের প্রথম পর্যায়ে ডায়রিয়া না ঘটাতেও পারে, কিন্তু তাদের আসল রোগ প্রকাশ পায় এক রকমের জ্বর দিয়ে, যাকে বলে আন্ত্রিক জ্বর বা টাইফয়েড।

পানিতে মিশে থাকা বিভিন্ন প্রকার ভাইরাস সৃষ্ট রোগ-ব্যাধি সমূহঃ
টাইফয়েড, হেপাটাইটিস, ডায়রিয়া, জন্ডিস, গ্যাসট্রিক, পেটের পীড়া, বদহজম, বমি, জ্বর, মাথা ব্যাথা, সর্দি-কাশি, স্বাসযন্ত্রের সংক্রমন, অবসাদ, এলার্জি, ইন্দ্রিয় বৈকল্য ইত্যাদি।

পানিতে মিশে থাকা বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া সৃষ্ট রোগ-ব্যাধি সমূহঃ-
ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি, নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, নাক দিয়ে রক্তক্ষরন, গ্যাসট্রিক, ক্ষুধামন্দা, অবসাদ, মুত্রাশয় সংক্রমন, মস্তিস্ক ঝিল্লি প্রদাহ ইত্যাদি।

পানিতে মিশে থাকা বিভিন্ন প্রকার এলজেল সৃষ্ট রোগ-ব্যাধি সমূহঃ-
হেপাটাইটিস-ই, জ্বর, স্বাসযন্ত্রের সংক্রমন, গ্যাসট্রিক, ফাংগাল সংক্রমন, চর্মরোগ, যকৃতের প্রদাহ, মস্তিস্ক ও স্নায়ুবিক সংক্রমন, পোলিও ইত্যাদি

পানিতে মিশে থাকা আর্সেনিক ও ক্লোরিন-সৃষ্ট রোগসমূহঃ-
ফুসফুসের ক্যান্সার, গলব্লাডার ক্যান্সার, স্কিন ক্যান্সার ইত্যাদি।

পানিতে মিশে থাকা লেড, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফেট ও ক্যাডমিয়াম সৃষ্ট রোগসমূহঃ-
কিডনীতে পাথর, কিডনী ড্যামেজ ইত্যাদি।

পানিতে মিশে থাকা সেলেনিয়াম, লেড, কপার ও ক্যাডমিয়াম-সৃষ্ট রোগসমূহঃ-
বিকলাঙ্গতা, দৈহিক বৃদ্ধি হ্রাস, দাঁতক্ষয় ইত্যাদি

পানিবাহিত রোগ থেকে পরিত্রানের উপায়সমূহ :-
বিশুদ্ধ পানি পান ও ব্যবহার নিশ্চিত করা। পানি ৩০ মিনিট ফুটিয়ে ফিটকিরি ব্যবহার করে অথবা পাঁচ লিটার পানিতে একটি পানি বিশুদ্ধকরণ টেবলেট দিয়ে আধ ঘণ্টা থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবহার করা, হোটেল বা দোকানের পানি খাওয়া বন্ধ করা। এছাড়া রাস্তায় খোলা জায়গার শরবত, খাবার খাওয়া বন্ধ করা, এলাকায় কারও চোখ হলুদ হলে, ডায়রিয়া হলে বা তিনদিনের বেশি জ্বর থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। হালিশহর বিডিআর মাঠ থেকে বিশুদ্ধকরণ টেবলেট সংগ্রহ করা, গর্ভবতী মহিলার চোখ হলুদ হলে স্থানীয় হাসপাতালে যোগাযোগ করা, বাসার ছাদে বা পানির নিচে সংরক্ষিত পানির ট্যাংক চারমাস পরপর ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করা, খাবারের আগে ও মলত্যাগের পরে হাত অন্তত ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে পরিষ্কার করা, হাতের নখ ছোট রাখা, খালি পায়ে বাথরুমে না যাওয়া এবং বাথরুমে আলাদা জুতা ব্যবহার করা, বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণের পাত্রটির নিচের অংশ নিয়মিত পরিষ্কার করা এবং ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখা, পাতলা পায়খানা হলে ওরস্যালাইন ও ঘরের তৈরি চিনি লবন মিশ্রিত শরবত বেশি বেশি পান করা এবং আতংকিত না হয়ে বিশুদ্ধ খাবারের পানি খাওয়া ও ব্যবহার করা।

কেন আমরা ?
আমরা বেস্ট ওয়াটার টেকনোলজি দীর্ঘ ১৪ বছর যাবৎ বিশুদ্ধ পানি সরবারহ নিশ্চিত করণের জন্য বিভিন্ন ধরণের ফিল্টার মেশিন বিক্রি এবং দেশের নানান স্থানে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করে থাকি।

Leave a Reply